শুক্রবার ১০ নভেম্বর ভারতের স্মার্টফোন মার্কেটের জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন: ফ্লিপকার্ট নিয়ে এলো তাদের প্রথম মেড ইন ইন্ডিয়া স্মার্টফোন বিলিয়ন ক্যাপচার+ আর প্রথমবার পা রাখলো ভারতের স্মার্টফোন মার্কেটে।
এর আগে অবশ্য ফ্লিপকার্ট তাদের তৈরি ট্যাবলেট বাজারে ডিজিফ্লিপ ব্র্যান্ড এর নাম দিয়ে, কিন্তু তাতে খুব বেশি সাড়া মেলেনি গ্রাহকদের তরফ থেকে। কারণ ডিজিফ্লিপ এর প্রোডাক্টগুলোর কোয়ালিটি ভালো হলেও, আফটার সেলস সার্ভিস খুব ই খারাপ ছিল। বর্তমানে চীনা মোবাইল কোম্পানিগুলোর অনেকেই “মেক ইন ইন্ডিয়া” প্রজেক্টের নাম নিয়ে চাইনীজ ফোন ভারতে অ্যাসেম্বল করে বিক্রি করছে। সেখানে ফ্লিপকার্টের বিলিয়ন ক্যাপচার+ ভারতীয়দের কাছে রীতিমতো একটা গর্বের বিষয়। ফোনটির ডিজাইন করা হয়েছে বেঙ্গালুরুতে, সফটওয়্যার ও ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ করা হয়েছে হায়দ্রাবাদ এ, প্যাকেজিং আর এক্সেসরিজ বানানো হয়েছে রাজধানী নতুন দিল্লীতে আর ম্যানুফ্যাকচারিং করা হয়েছে নয়ডা তে। বিলিয়ন ক্যাপচার+ প্রকৃতই “মেক ইন ইন্ডিয়া” প্রজেক্টের একটা সফল রূপায়ণ। এবার আসি ফোনের কথায়
ফোনটি দেখতে বেশ প্রিমিয়াম মেটালিক ফিনিশের জন্য।
ফোনটিতে রয়েছে ডুয়াল সিম হাইব্রিড সিম স্লট। অর্থাৎ আপনি কোনও নির্দিষ্ট সময় হয় ডুয়াল সিম ব্যবহার করতে পারবেন অথবা একটি সিম একটি মাইক্রোএসডি(microSD) কার্ড ব্যবহার করতে পারবেন। দুটি সিম স্লট ই ৪জি VOLTE চালাতে সক্ষম তবে যেকোনো নির্দিষ্ট সময়ে ফোনটির যেকোনো একটি সিম স্লটে ই ৪জি voLTE চলতে পারে।
ফোনটি ৩জিবি র্যাম/৩২ জিবি স্টোরেজ আর ৪জিবি র্যাম/৬৪ জিবি স্টোরেজের এই দুটি ভারিয়ান্ট-এ উপলব্ধ। মেমোরি ১২৮ জিবি অবধি বাড়ানো যেতে পারে হাইব্রিড স্লটের মাধ্যমে। এছাড়াও ফোনটিতে আনলিমিটেড ক্লাউড স্টোরেজের সুবিধা দিচ্ছে ট্রনএক্স নামক এক ভারতীয় সংস্থা।
প্রসেসর রয়েছে ২.০ গিগাহার্জ অক্টাকোর স্নাপড্রাগন ৬২৫। এটি একটি পাওয়ার এফিসিয়েন্ট প্রসেসর। গ্রাফিক প্রসেসর রয়েছে এড্রেনো ৫০৬। এই কম্বিনেশন যেকোনো ভারী এপ্লিকেশন বা গেম চালাতে সক্ষম।
৫.৫ ইঞ্চির ফুল এইচডি ১৯২০×১০৮০ পিক্সেল রেসলিউসনের স্ক্রিন ৪০১ পিপিআই পিক্সেল ডেন্সিটির সাথে উপলব্ধ, যা ২.৫ডি আসাহী ড্রাগনট্রেল গ্লাস দ্বারা সুরক্ষিত।
সামনে ৮ মেগাপিক্সেল সেলফি ক্যামেরা আর পিছনে ১৩ মেগাপিক্সেল ডুয়াল ক্যামেরা সেন্সর যার একটি আরজিবি কালার সেন্সর ও আরেকটি সাদা কালো মনোক্রম সেন্সর। রিয়ার ক্যামেরাটি ফটোতে ডিএসএলআর এর মত বোকেহ এফেক্ট আনতে সক্ষম। এছাড়াও ফোনটির ক্যামেরাতে পোর্ট্রেট মোড, সুপার নাইট মোড আর ডেপথ অফ ফিল্ড এর সুবিধা ও আছে।
ফোনটিতে যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সমস্ত সেন্সর রয়েছে। সিকিউরিটি র জন্য রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ও।
কানেক্টিভিটি র ক্ষেত্রে ফোনটিতে রয়েছে ইউএসবি টাইপ-সি(USB-C) যা এই বাজেটের স্মার্টফোন-এ সহজে চোখে পড়ে না। এছাড়াও রয়েছে ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ, জিপিএস, ৪জি voLTE ইত্যাদি।
ফোনটির অপারেটিং সিস্টেম এন্ড্রয়েড ৭.১.২ নুগাট। এই স্টক এন্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম এন্ড্রয়েড ৮.০ ওরিও আপডেট পাবে বলে সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই ফোনে এন্ড্রয়েড সিকিউরিটি প্যাচ এর আপডেট ও তাড়াতাড়ি মিলবে বলে সংস্থা র তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
ফোনে রয়েছে ৩৫০০এমএএইচ ব্যাটারি। পাশাপাশি ফোনটি কোয়ালকম কুইকচার্জ ২.০ সাপোর্ট করে, যেটি ১৫ মিনিটে ৭ ঘন্টা ব্যবহার করার মতো উপযুক্ত ব্যাটারি চার্জ করার দাবি করে।
এবার আসি ফোনের আফটার সেলস সাপোর্টের কথায়। ডিজিফ্লিপ এর ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ফ্লিপকার্ট তার বিলিয়ন ব্রান্ডের জন্য ঢেলে সার্ভিস সেন্টার সাজিয়েছে বলে দাবি করছে। দেশজুড়ে ১২৫ টি শহরে তারা ১৩০ টি সার্ভিস সেন্টার খুলেছে যেগুলি বিলিয়ন ব্রান্ডের মোবাইলকে অফিসিয়াল সাপোর্ট দেবে।
বাকিটা নাহয় এবার আপনার উপরেই ছেড়ে দেওয়া যাক!