প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাস এলেই কাউন্টডাউন শুরু হয়ে যায় Apple-এর মেগা ইভেন্টের। সেই ট্র্যাডিশন বজায় রেখেই 12ই সেপ্টেম্বর আত্মপ্রকাশ Apple iPhone XR-এর, এবছরের সবচেয়ে “সস্তা” iPhone। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে ফ্যানবয়দের মুখে কি হাসি ফোঁটাতে পারলেন টিম কুক? জেনে নেবো এই পোস্টে।


Apple iPhone XR-কে Apple iPhone 8 বা 8 plus হ্যান্ডসেটের উত্তরসূরী বলে ধরা হচ্ছে। ট্রাডিশনাল iPhone-এর স্টাইল ছেড়ে iPhone X এর মতো সাম্প্রতিক নচ্ ডিসপ্লে আর গ্লাস স্যান্ডউইচ ডিজাইনকে যেমন স্বাগত জানিয়েছে জেন Y, তেমনই touch ID ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার আর 3D টাচ ফিচার না থাকা মেনে নিতে পারছে না অনেক Apple ফ্যানবয়।
326 ppi পিক্সেল ডেন্সিটির 6.1 ইঞ্চির 1792×828 রেসলিউশনের লিক্যুইড রেটিনা নচ্ ডিসপ্লে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে, কিন্তু iphone X সিরিজের অন্যান্য ফোনগুলোর মতো এটা OLED ডিসপ্লে নয়, বরং LCD ডিসপ্লে। সামনে বা পেছনের গ্লাস প্রোটেকশন এর ব্যাপারে তেমন পরিস্কার করে কিছু জানানো হয়নি সংস্থার তরফে। তবে 3D টাচ ফিচারটা হয়তো অনেকেই মিস করবে।

ডিসপ্লের পর যেটা নিয়ে iPhone প্রেমীদের সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথা থাকে সেটা হলো, iphone-এর লোগো দেখানো নিজস্বী তোলা, তাই এবারে আমরা কথা বলবো ক্যামেরা নিয়ে। এই ফোনের পিছনের দিকে রয়েছে 12 মেগাপিক্সেল f1.8 ক্যামেরা যা নিখুঁত পোর্ট্রেট মোড-এর ছবি তুলতে সক্ষম। পাশাপাশি কম আলোতেও ছবি তোলার ক্ষেত্রে মোবাইল ক্যামেরার মধ্যে Apple এর এই ক্যামেরার জুড়ি মেলা ভার। নিজস্বীপ্রেমীদের জন্যে রয়েছে 7 মেগাপিক্সেল f2.2 ক্যামেরা, Apple যার নাম দিয়েছে TrueDepth ক্যামেরা। এই ক্যামেরা কোনোভাবেই নিজস্বীপ্রেমীদের হতাশ করবে না।

এবার বলি ফোনের ভেতরে কি রয়েছে! ফোনটা চলছে Apple-এর লেটেস্ট A12 অক্টা-কোর প্রসেসরে যা আগের জেনারেশনের A11 প্রসেসরের থেকে 15% বেশি ফাস্ট আর 50% বেশি পাওয়ার এফিশিয়েন্ট বলে সংস্থার দাবি। পাশাপাশি এই প্রসেসরের গ্রাফিক পারফরম্যান্সও গত বছরের A11 প্রসেসরের থেকে 4 গুন বেশি ফাষ্ট হবে বলে সংস্থা দাবি করেছে। নতুন iOS 12 অপারেটিং সিস্টেমে চলবে এই ফোন, যা পৃথিবীর সবচেয়ে স্টেবল মোবাইল OS এর একটা।

ফোনে রয়েছে 2942 mAh-এর ব্যাটারি যা ওয়ারলেস চার্জিং সাপোর্ট করে। নতুন প্রসেসরের সঙ্গে এই ফোন একটানা 25 ঘন্টা টকটাইম বা একটানা 15 ঘন্টা ওয়েব ব্রাউসিং সাপোর্ট করে যা আগের জেনারেশনের iphone-এর উপর একটা বড় আপগ্রেড। 30 মিনিটে 50% চার্জ হয়ে যাওয়ার ফাস্ট চার্জিংয়েরও সুবিধা রয়েছে এই ফোনে, তবে তার জন্য আপনাকে আলাদা করে Apple সাপোর্ট করে এমন ব্র্যান্ডের ফাস্ট চার্জার কিনতে হবে।

ফোনের কানেকটিভিটির ক্ষেত্রে 2G/3G/4G VoLTE-র সাপোর্ট রয়েছে, আরও রয়েছে ডুয়াল ব্যান্ড ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথ 5.0, GPS আর NFC-র সাপোর্টও। হেডফোন জ্যাকের সাথে iPhone-এর শত্রুতা এই ফোনেও বজায় থাকছে। তবে 2012 সালের ডুয়াল সিম প্রযুক্তি 2018তে প্রথমবারের জন্য Apple নিয়ে এলো তাদের ফোনে, যেখানে আপনার ফোনের প্রাইমারী সিম থাকবে আপনার ফোনের সিম স্লটে, আর আপনার সেকেন্ডারি সিম আপনার ফোনে চালু থাকবে eSIM হিসেবে। শুনতে ভালো লাগলেও দেখতে হবে এটা বাস্তবে কতটা কার্যকরী হয়!

ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ছাড়া অন্যান্য যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ সব সেন্সর এই ফোনে রয়েছে। তবে নিরাপত্তার সাথে যাতে কোনো আপোষ না করতে হয় তার জন্য এই ফোনে রয়েছে আগের জেনারেশনের চেয়ে দ্রুততর Advanced Face ID।

পাশাপাশি এই ফোনে রয়েছে IP67 Dust & Water Resistant সার্টিফিকেশন, যা হঠাৎ করে আপনার ফোন জলে পড়ে গেলে বা বৃষ্টিতে ভিজলে আপনার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়তে দেবে না।

ফোনটা পাওয়া যাবে 6টা কালার ভেরিয়েন্ট-
(PRODUCT)RED, Yellow, White, Coral, Black আর Blue তে।

ভারতে এই ফোনের অফিশিয়াল দাম নীচে দেওয়া হলো-
iPhone XR 64 GB ভেরিয়েন্টের দাম ₹76,900
iPhone XR 128 GB ভেরিয়েন্টের দাম ₹81,900
iPhone XR 256 GB ভেরিয়েন্টের দাম ₹91,900

28শে সেপ্টেম্বরের পর থেকে ভারতে এই ফোন পাওয়া শুরু হবে বলে মনে করা হচ্ছে। দাম যাই হোক, iPhone XR-ই এবছরের সবচেয়ে “সস্তা”র আইফোন। তবে এবার আর আপনার দু’টো কিডনিও কিন্তু আর নিরাপদ রইলো না।